টানা কয়েকদিনের পতনের পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পদক্ষেত্রে তৃতীয় দিনের মতো দেশের শেয়ারবাজারে মূল্য সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজারে সূচকের উত্থানের সঙ্গে লেনদেনও হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
জানা গেছে, পুঁজিবাজারে তারল্যপ্রবাহ বাড়াতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশের তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো। পুঁজিবাজারে যেসব ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশের নিচে বিনিয়োগ রয়েছে, তারা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেটি ২ শতাংশ করে বাড়াবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে এক বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিএসইসি ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এ সময় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান ও মোহাম্মদ রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, দুই পক্ষ আলোচনার মাধ্যমে বৈঠকে তিনটি বিষয়ে একমত হয়েছে। প্রথমটি হলো পুঁজিবাজারে যেসব ব্যাংকের বিনিয়োগ এখনো তাদের মূলধনের ২৫ শতাংশের নিচে রয়েছে, তারা সেটি দ্রুত ২ শতাংশ করে বাড়াবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্যাংকগুলোকে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অনেক ব্যাংক এখনো এ তহবিল গঠন করতে পারেনি। যারা এখনো তহবিল গঠন করেনি, তারা দ্রুত সেটি গঠন করে বিনিয়োগ করতে সম্মত হয়েছে। বৈঠকে বিএসইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মূলধন বাড়ানোর জন্য ব্যাংকগুলোর বন্ড ইস্যুর প্রস্তাবগুলো দ্রুত অনুমোদন দেয়া হবে। যাতে ব্যাংকগুলো পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে পারে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, পুঁজিবাজারের তারল্যপ্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর সিএফওদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তারল্যপ্রবাহ বাড়াতে বিভিন্ন দিক নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়। এতে তিনটি বিষয়ে সবাই একমত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রথমে রয়েছে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের সর্বোচ্চ যে ২৫ শতাংশ সীমা রয়েছে, তারা কয়েকদিনের মধ্যে ২ শতাংশ বিনিয়োগ বাড়াবেন। এছাড়া ব্যাংকগুলোকে ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের নির্দেশনা রয়েছে। যেসব ব্যাংক এখনো এ বিশেষ তহবিল গঠন করেনি তারা দ্রুত গঠন করবে এবং যাদের ফান্ড রয়েছে তারা সম্মিলিতভাবে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে সাপোর্ট দেবে।
তিনি আরো বলেন, তৃতীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টায়ার-১ ও টায়ার-২ অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর মূলধন শক্তিশালী করার জন্য যেসব ব্যাংক পারপিচুয়াল ও সাব-অর্ডিনেটেড বন্ডের অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে, সেটি অতি দ্রুত প্রসেস করে দেয়া হবে। এছাড়া মূলধন উত্তোলনের জন্য ব্যাংকের অন্যান্য যেসব প্রক্রিয়া থাকবে, সে ক্ষেত্রেও কমিশন সার্বিকভাবে সহায়তা করবে। এ তিনটা সিদ্ধান্ত যদি বাস্তবায়ন করা যায় এবং পারপেচুয়াল ও সাবঅর্ডিনেট বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে যদি ব্যাংকের মূলধন বৃদ্ধি পায়, সে ক্ষেত্রে তারা মূলধনের ২৫ শতাংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়বে।