দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ১৫ লাখ গ্রাহকের মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪ কোটি ১০ লাখ ৯৬ হাজার অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রয়েছে; বাকি ৬ কোটি ৯৪ লাখ অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয়। ‘এমএফএসের ১০ বছর : করোনা-পরবর্তী মাঠ-বাস্তবতা’ শীর্ষক একটি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে।
শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে উন্নয়ন সমন্বয় কার্যালয়ের খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ মিলনায়তনে ‘এমএফএসের ১০ বছর : করোনা-পরবর্তী মাঠ-বাস্তবতা’ শীর্ষক সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে উন্নয়ন সমন্বয় ও নলেজ অ্যালায়েন্স। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সমাজতাত্ত্বিক ও নলেজ অ্যালায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা খন্দকার সাখাওয়াত আলী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান, অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ. মনসুর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক অসীম কুমার দাশগুপ্ত প্রমুখ।
ঢাকা থেকে শুরু করে জামালপুর উপজেলার মন্নিয়ার চর এলাকা পর্যন্ত মোট ৩২টি পয়েন্টে গিয়ে সাধারণ মানুষ ও এজেন্টের সঙ্গে কথা বলে ‘এমএফএসের ১০ বছর : করোনা-পরবর্তী মাঠ-বাস্তবতা’ শীর্ষক একটি জরিপ করা হয়েছে। সেমিনারে জানানো হয়, দেশে বর্তমানে ১৩টি মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে এর মধ্যে বিকাশ, রকেট ও নগদ মার্কেট দখল করেছে ৬০ শতাংশ। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো ৪০ শতাংশ মার্কেটে অবদান রাখছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষকে এমএফএসের আওতায় আনতে হবে। সেবার মান বাড়াতে হবে, কমাতে হবে খরচও। এক দশক পর এখনো মোবাইল ব্যাংকিং ক্যাশ-ইন ও ক্যাশ আউটের মধ্যে সীমাবদ্ধ, এজেন্ট নির্ভর। এ পদ্ধতির পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট না করে এখান থেকেই নানা ব্যবহার বাড়ালে খরচ অনেক কমে আসবে, এজেন্ট কমিশনও দিতে হবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক অসীম কুমার দাশগুপ্ত বলেন, এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর টার্নওভার দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা, যা অনেক ব্যাংকের চেয়েও বেশি। প্রতিষ্ঠানগুলোর পেমেন্ট সিস্টেম আরও সহজ করতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানকে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে মার্কেটে অনৈতিক চর্চার সুযোগ দেয়া যাবে না।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নেই এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে সরকারের পক্ষ থেকে নানা সুবিধা দেয়া হয়েছে। তারা এটা ভোগ করছে। আর গত ১০ বছর ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম নীতি অনুসরণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসার পরও বিকাশ, রকেট ও কিউক্যাশকে সুবিধা দেয়া হচ্ছে না, এটা ঠিক নয়।