করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে সৃষ্টি হওয়া বিশ্বমন্দায়ও প্রথমবারের মতো রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যদিও চলতি অর্থবছরে সরকারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তথ্যমত্র, ২০২১- ২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৭১৭ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানির অর্থমূল্য ছিল ৩ হাজার ৮৫২ কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার ডলার। রপ্তানি হওয়া পণ্যের প্রায় ৮২ শতাংশই তৈরি পোশাক।
রপ্তানিকারক সংগঠন বিজিএমইএর হিসাব অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম ২৫ দিনে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩২০ কোটি ডলারের। এ পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিলে এরই মধ্যে চলতি অর্থবছরের মোট রপ্তানি ৫ হাজার কোটি ডলার বা ৫০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকবে। চলতি বছরে রপ্তানি আয় ৫৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়ানোর প্রত্যাশা করছেন অনেকেই। ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান বলেন, সাধারণত মে, জুন মাসে রপ্তানি কিছুটা কমে। তা সত্ত্বেও চলতি অর্থবছর পণ্য রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করবে।
তিনি বলেন, এর সঙ্গে সার্ভিস রপ্তানি আরও ৮ বিলিয়ন ডলার যুক্ত হলে চলতি বছর বাংলাদেশের মোট রপ্তানি ৫৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে পারে। আগামী অক্টোবর পর্যন্ত রপ্তানির এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে।
রপ্তানি বাড়াতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, পণ্য রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। এই অর্থবছর শেষে মোট রপ্তানি আরও বেশি হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি ৮০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, পোশাক খাতের মাধ্যমেই রফতানি ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়া অনেক বড় অর্জন। পণ্যে বৈচিত্র্য আনার পাশাপাশি রফতানি বাজার সম্প্রসারণ এবং শিল্পকে একটি টেকসই অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে জাতি হিসেবে আমাদের অর্জন এবং গত ৪০ বছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের অবদান এখন আন্তর্জাতিক মহলেও আলোচিত।
ফারুক হাসান আরো বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তার বলিষ্ঠ ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ মহামারী মোকাবেলা করে একটি শক্তিশালী অবস্থানে আসীন হয়েছে। মহামারী চলাকালে তিনি অর্থনীতিকে টিকিয়ে রেখেছেন, আমাদের প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়ে শিল্প ও শ্রমিকের জীবন-জীবিকা সুরক্ষিত রেখেছেন। তার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ এরই মধ্যে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হয়েছে। এখন ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার রূপকল্প বাস্তবায়নের পথে রয়েছি আমরা