
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ২০২১-২২ অর্থবছরে এসব বাজারের পাশাপাশি অপ্রচলিত বাজারে পোশাক রপ্তানি করে বাজিমাত করেছে বাংলাদেশ। অপ্রচলিত এসব বাজারে ৬৩৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে দেশের গার্মেন্ট মালিকরা। যা ২০২০-২১ অর্থবছরের তুলনায় ২৫.৪ শতাংশ বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যান অনুসারে, পোশাক সামগ্রীর মধ্যে বাংলাদেশ ২৮৫ কোটি ডলারের বোনা কাপড় এবং ৪৭৮ কোটি ডলারের নিটওয়্যার পোশাক রপ্তানি করেছে। অপ্রচলিত বাজারে হওয়া রপ্তানি থেকে স্থানীয় পোশাক খাত ৪ শতাংশ নগদ প্রণোদনা ভোগ করে। তাছাড়া, মোট রপ্তানির ১৪.৯৬ শতাংশের গন্তব্য ছিল অপ্রচলিত বাজার হিসাবে চিহ্নিত ১৫টিরও বেশি দেশে। ২০২০-২১ অর্থবছরে সেই দেশগুলোতে ৫০৮ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করা হয়েছে। অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, মেক্সিকো উল্লেখযোগ্য।
ইপিবির তথ্য অনুসারে, অপ্রচলিত বাজারগুলোর মধ্যে গত অর্থবছরে জাপানে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে এশিয়ার দেশটিতে ১০৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করা হয়েছে, যা ২০২০-২১ অর্থবছরের চেয়ে ১৬.২৮ শতাংশ বেশি।
এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ায় ৮১ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, ভারতে ৭১ কোটি ৫৪ লাখ ১০ হাজার ডলার, রাশিয়ায় ৫৮ কোটি ৩৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪৩ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৮ কোটি ২৪ লাখ ১০ হাজার ডলার, মেক্সিকোয় ২৭ কোটি ৫১ লাখ ১০ হাজার ডলার এবং চীনে ২২ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, এশিয়ার বাজারকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো গড়ে তোলাই আমাদের পরিকল্পনা। ইতোমধ্যেই জাপান, ভারত ও কোরিয়ায় আমাদের রপ্তানি ধীরে ধীরে বেড়েছে। যুদ্ধের কারণে রাশিয়ায় রপ্তানি বাড়ানো সম্ভব হয়নি। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বাজারও তাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পোশাক প্রস্ততকারকদের বৈশ্বিক এক্সপোতে অংশগ্রহণ নতুন এবং অপ্রচলিত বাজারে রপ্তানি বাড়াতে অনেক অবদান রেখেছে। সেইসঙ্গে পোশাক খাতে নিরাপত্তার উন্নতির কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থাও বেড়েছে।
ইপিবির তথ্যানুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ৫,০০০ কোটি ডলার আয়ের মাইলফলক পেরিয়েছে। বিদায়ী অর্থবছরে রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশ আয় করেছে ৫,২০৮ কোটি টাকা, যা আগের বছরের (৩,৮৭৫ কোটি টাকা) চেয়ে ৩৪.৩৮% বেশি। রপ্তানি আয়ের অন্যতম বড় উৎস ছিল পোশাক খাত। বিদায়ী অর্থবছরে এ খাতের রপ্তানি আয় ছিল ৪,২৬০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের (৩, ১৪৫ কোটি টাকা) চেয়ে ৩৫.৪৭% বেশি।