বৈদেশিক মুদ্রার পাশাপাশি বিশ্বের বেশির ভাগ কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ হিসেবে স্বর্ণও মজুদ রাখে। অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজস্ব ভল্টের পাশাপাশি এসব স্বর্ণ মজুদ রাখে বিদেশি ব্যাংকেও। বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বর্ণেরও বড় অংশ গচ্ছিত রয়েছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডে।
রিজার্ভ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মজুদ আছে ১৪ হাজার ৩৩ কেজি স্বর্ণ। তবে এর ১৭ শতাংশ জমা আছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে। আর ৪২ শতাংশই গচ্ছিত আছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডে। বাকি ৪১ শতাংশ বিনিয়োগ করা হয়েছে লন্ডনের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও এইচএসবিসি ব্যাংকের মাধ্যমে। মজুদকৃত এসব স্বর্ণের মূল্য ৭ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা।
স্বর্ণ ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে রিজার্ভ হিসেবে রুপা রয়েছে পাঁচ হাজার ২৪৮ কেজি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২১-২২ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, রিজার্ভ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ের ভল্টে রয়েছে দুই হাজার ৩৬৩ কেজি স্বর্ণ। আর ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের ভল্টে জমা আছে ৫ হাজার ৮৭৬ কেজি স্বর্ণ। বাকি ৫ হাজার ৭৯৪ কেজি স্বর্ণ লন্ডনের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও এইচএসবিসি ব্যাংকে বিনিয়োগ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, রিজার্ভের অংশ হিসেবে থাকা স্বর্ণের বাইরেও বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে প্রায় তিন হাজার কেজি স্বর্ণ রয়েছে। এই স্বর্ণের কোনো অংশই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিবেদনের অন্তর্ভুক্ত নয়। বিভিন্ন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী ও কাস্টমসের জব্দ করা স্বর্ণ বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক শুধু কাস্টডিয়ান হিসেবে ভূমিকা রাখে। আইনি নিষ্পত্তি শেষে কোনো স্বর্ণ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হলে সেটি স্থায়ী খাতে স্থানান্তর করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বিশুদ্ধ স্বর্ণের বার হিসেবে থাকলে সেটি বাংলাদেশ ব্যাংক নিজেই কিনে নিয়ে রিজার্ভে অন্তর্ভুক্ত করে। আর অলংকার হিসেবে থাকলে নিলামের মাধ্যমে বাজারে বিক্রি করা হয়।
২০২১ সালের ৩০ জুন রিজার্ভে থাকা স্বর্ণের মূল্য ছিল ছয় হাজার ৭১৬ কোটি টাকা। চলতি বছরের ৩০ জুন রিজার্ভের স্বর্ণের মূল্য সাত হাজার ৬৬০ কোটি টাকা দেখিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের স্বর্ণের দাম ৯৪৪ কোটি টাকা বেড়েছে।
