বিশ্ব অর্থনীতির মন্দায় চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। এছাড়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ।
মঙ্গলবার সংস্থাটির সদর দফতর থেকে প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস জানুয়ারি ২০২৩’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এ তথ্য দিয়েছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, গৃহস্থালীর আয় ও সংস্থাগুলোর ব্যয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব, সেইসাথে জ্বালানি ঘাটতি, আমদানি বিধিনিষেধ এবং মুদ্রানীতি কঠোর হওয়ার কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৫.২ শতাংশে নামবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অনুমিত এই প্রবৃদ্ধি আগের বছরের ৭.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির তুলনায় কম। কিন্তু আশা করা হচ্ছে, এটি আবারও বাড়বে এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ তার সম্ভাব্য গতিতে ফিরে আসবে।’
বিশ্বব্যাংক বলেছে, বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম এবং পরিবার ও ব্যবসার জ্বালানি চাহিদা মেটানোর বিষয়ে বাংলাদেশ বেশ সংকটের মধ্যে ছিল। ওয়াশিংটন-ভিত্তিক এই ঋণদাতা সংস্থার মতে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস বাংলাদেশের অর্থনীতির সংকটে পড়ার ঝুঁকি বাড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারির কারণে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এরপর ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ। আর গত অর্থবছরে এই প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
চলতি বছর বৈশ্বিক অর্থনীতি ‘বিপজ্জনকভাবে মন্দার কাছাকাছি’ আসবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি – যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং চীনের দুর্বল প্রবৃদ্ধির জেরে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এদিনই ২০২৩ সালের বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস প্রায় অর্ধেক কমিয়েছে তারা। মূলত সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার বাড়ানোর প্রবণতা, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন অব্যাহত ও বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর নড়বড়ে অবস্থানের কারণে দেশগুলো অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হয়েছে।
২০২৩ সালে বৈশ্বিক মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৭ শতাংশ হবে বলে প্রত্যাশা করছে। ২০০৯ সাল ও ২০২০ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময়টা বাদ দিলে গত তিন দশকের মধ্যে এটিই হবে সবচেয়ে ধীর প্রবৃদ্ধির হার।