ব্যাংকের আমানতের ওপর বেঁধে দেয়া সুদহার তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে ভোক্তা ঋণের (ব্যক্তিগত, গাড়ি, আবাসন, শিক্ষা ঋণ) সুদহার ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। অন্যদিকে পরিবর্তন আনা হয়েছে নীতি সুদহারেও।
রোববার চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের শেষ ছয় মাসের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে এ ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার তুলে নেয়া হলো। এছাড়া ভোক্তা ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার ৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। বর্তমানে ব্যাংকের সব ধরনের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশে বেঁধে রাখা হয়েছে। এখন সেখানে ভোক্তা ঋণের সুদহার বাড়িয়ে ১২ শতাংশ পর্যন্ত করতে পারবে ব্যাংকগুলো। তবে শিল্প ঋণসহ অন্যান্য ঋণের ক্ষেত্রে সুদহার বাড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি।
নতুন মুদ্রানীতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আমানতের সুদহার উন্মুক্ত করে দেয়া ও ঋণ সুদহারে কিছুটা শিথিল করায় তা আমানতের সুদহার বাড়াতে সহায়তা করবে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার তুলে দেয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালের আগস্ট মাসে আমানতের সর্বনিম্ন সুদহার বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, ৩ মাস ও তার বেশি মেয়াদি আমানতের সুদ কোনোভাবেই ৩ মাসের গড় মূল্যস্ফীতির কম হতে পারবে না। বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি যেখানে ঊর্ধ্বমুখি তাতে আমানতের সুদহারও বাড়ানো হলো।
এদিকে, মূল্যস্ফীতির চাপ কমানো এবং বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ঋণ সরবারহ নিশ্চিত করতে নীতি হার হিসাবে বিবেচিত রেপো সুদহার ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৫ দশমিক ৭৫ থেকে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলো জরুরি প্রয়োজনে অর্থ নিলে গুনতে হবে অতিরিক্ত সুদ। রিভার্স রেপোও ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৪ শতাংশ থেকে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা রাখলে ব্যাংকগুলোকে আগের চেয়ে বেশি সুদ পাবে। এছাড়া মুদ্রা সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা ১২ দশমিক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশে নামানো হয়েছে।