সহজে ব্যাংক হিসাব খোলা, টাকা জমা-তোলা, রেমিট্যান্স সরকারি ভাতার টাকা তোলা, বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধ, ই-টিকেটিং, শেয়ারবাজারের পেমেন্টসহ ব্যাংক লেনদেনের অনেক কিছুই এখন করা যাবে গ্রামে বসে। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক সেবাকে সহজ করতে দেশব্যাপী চালু হচ্ছে এই ‘ভিলেজ ডিজিটাল বুথ’। ভবিষ্যতে গ্রামগুলোতে ঋণ দেওয়ার মতো পরিকল্পনাও রয়েছে এই বুথ থেকে।
‘ভিলেজ ডিজিটাল বুথ’ প্রতিষ্ঠায় সরকারের এটুআইয়ের এর পেমেন্ট এগ্রিগেটর প্ল্যাটফর্ম ‘একপে’ এবং জয়তুন বিজনেস সলিউশনস একসঙ্গে কাজ করবে। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর এবং জয়তুন বিজনেস সলিউশনস-এর চেয়ারম্যান মোঃ আরফান আলী নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এক সমঝোতা স্মারক সই করেন। পাইলট প্রকল্প হিসেবে খুব শিগগিরই মুন্সিগঞ্জের ৫০টি গ্রামে বুথ চালু করা হবে এই সেবা। আগামী ৩ বছরে দেশের সব গ্রামে ডিজিটাল বুথ স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় দেশব্যাপী প্রান্তিক এলাকায় বসবাসকারী সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবা দিতে প্রতিটি গ্রামে একটি করে বুথ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এক্ষেত্রে এটুআইয়ের পেমেন্ট এগ্রিগেটর প্ল্যাটফর্ম ‘একপে’ এই কার্যক্রমে কারিগরি এবং সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে।
মূলত এটি একটি গ্রামীণ আর্থিক সেবা কেন্দ্র হয়ে গড়ে উঠবে, এই বুথ থেকে ডিজিটাল আর্থিক সেবাসহ বিভিন্ন প্রকার ই-সেবা প্রদান নিশ্চিত করা হবে। এতে গ্রামীণ অঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আর্থিকসেবা বহির্ভুক্ত জনগোষ্ঠী তাদের আর্থিক সেবা গ্রহণে অনেক বেশি সময়, কষ্ট ও অর্থের সাশ্রয় করতে পারবে। ইতোমধ্যে দেশের ৩৫টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই সেবা দিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বলেও অনুষ্ঠানে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে জয়তুন বিজনেস সলিউশনস-এর চেয়ারম্যান মো. আরফান আলী বলেন, উন্নত দেশগুলোর ক্যাশ ইন-ক্যাশ আউট পয়েন্টের মতো করে ভিলেজ ডিজিটাল বুথ করা হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে এই ডিজিটাল বুথ বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। বর্তমানে দেশের ১৫ বছরের বেশি জনসংখ্যার ৫৭% এর ব্যাংক একাউন্ট আছে। বাকি ৪৩% এখনো ব্যাংক চ্যানেলের বাইরে আছে। আমাদের লক্ষ্য, এই জনগোষ্ঠীকে ব্যাংক চ্যানেলের আওতায় নিয়ে আসা। কারণ, আমরা অতীতের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ব্যাংক একাউন্ট যাদের নাই, তাদের উন্নতি একাউন্ট হোল্ডারদের তুলনায় কম। যেসব ব্যাংক গ্রামে লোন দিতে চায়, তারা এই বুথের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে পারবে।
বুথ স্থাপনের কারণে ৯০ হাজার গ্রামে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের ইউনিয়নগুলোতে ২০১০ সাল থেকে ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়। সেটি সফল হওয়ার কারণে গ্রামে গ্রামে ডিজিটাল বুথ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখান থেকে প্রফিট করা আমাদের মূল উদ্দেশ্য না। আমরা ব্যাংক, এমএফএস ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সার্ভিস চার্জকে এক-তৃতীয়াংশে কমিয়ে নিয়ে আসবো।