ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থার আইনি কাঠামো, দেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট, প্রযুক্তিনির্ভর ব্যাংক ব্যবস্থায় বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান বিশ্লেষণ করে ‘ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপন বিষয়ক গাইডলাইন্স’ (বাংলা ও ইংরেজি) প্রণয়ন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যনতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে সমগ্র বিশ্বে অন্যান্য খাতের মতো আর্থিক খাতেও সেবা প্রদানের ধরনে বৈচিত্র্য এসেছে। বাংলাদেশেও ব্যাংক ও আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রচলিত সেবা দেওয়ার পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবা দিতে আগ্রহী। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনতে বিভিন্ন বিকল্প ডেলিভারি চ্যানেল, তথা-মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস এবং অন্যান্য ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আর্থিক সেবা দেওয়ার জন্য ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুমতি দিয়েছে।
উক্ত গাইডলাইন্স অনুযায়ী, প্রতিটি ডিজিটাল ব্যাংককে ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩১ এর আওতায় বাংলাদেশ ব্যাংক হতে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া পরিশোধ সেবা (পেমেন্ট সার্ভিস) পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেমস রেগুলেশন, ২০১৪ এর বিধানাগুলো অনুসরণ করতে হবে। ব্যয় সাশ্রয়ী ও উদ্ভাবনীমূলক ডিজিটাল আর্থিক পণ্য ও সেবা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিকট সহজলভ্য করার জন্য ডিজিটাল ব্যাংক অনলাইন প্রযুক্তিনির্ভর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, ব্লকচেইন এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অন্যান্য অগ্রসরমান প্রযুক্তি ব্যবহার করবে।
বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংকের জন্য এ গাইডলাইন্স প্রণয়ন করা হয়েছে। যা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানায়, বাংলাদেশে ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠায় ইচ্ছুক আবেদনকারীগণ এ ‘ডিজিটাল ব্যাংক স্থাপন বিষয়ক গাইডলাইন্স’ অনুসরণ করবেন। প্রস্তাবিত ডিজিটাল ব্যাংক আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমকে অধিকতর সম্প্রসারণ, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবেলা এবং ক্যাশলেস বাংলাদেশ সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রভূত অবদান রাখবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।