বাংলাদেশ থেকে ভারতের কলকাতায় পর্যটক সংখ্যায় ধস নেমেছে। এর ফলে বড় ক্ষতির শিকার হয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশি ক্রেতার অভাবে রাজ্যটির নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা স্থানীয় বাণিজ্য কর্তৃপক্ষের কাছে বাংলাদেশি পর্যটকদের ভিসা প্রদান প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশি নাগরিকরা টাইমস অভ ইন্ডিয়াকে জানান, বর্তমানে ভারতীয় ভিসা প্রদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লাগছে ৯০ দিনের বেশি। অথচ আগে এই সময় ছিল মাত্র ১৫ দিনের মতো। এটি কলকাতায় বাংলাদেশি ক্রেতার সংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ।
কলকাতার স্থানীয় ব্যবসা সংগঠনগুলো বলছে, প্রতিদিন সাধারণত ৬ হাজার বাংলাদেশি নাগরিক কলকাতা যান। শীত মৌসুমে সেই সংখ্যা দৈনিক ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু ভিসা কড়াকড়ির কারণে এখন দিনে মাত্র ২ থেকে ৩ হাজার পর্যটক কলকাতা যাচ্ছেন।
কলকাতার ফ্রি স্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এফএসএসটিএ) যুগ্ম সম্পাদক মো. সাইফ শামীম বলেন, আগস্ট থেকে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে আমাদের ব্যবসা সর্বকালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশিদের ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে বিলম্ব হওয়ার সমস্যাটি নিয়ে এফএসএসটিএ গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখেছে।
এফএসএসটিএর সভাপতি এবং কলকাতা-ঢাকায় চলাচলকারী সোহাগ পরিবহনের পরিচালক মনোতোষ কুমার সাহা বলেন, গত ১৫ দিনে ৪৫ জন যাত্রী ধারণক্ষমতার বাসগুলো মাত্র ১২ থেকে ১৪ জন যাত্রী নিয়ে কলকাতায় পৌঁছাচ্ছে।
কলকাতা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী শ্যামলী যাত্রী পরিবহনের মালিক অবনি কুমার ঘোষ জানান, তাদের ৪৫ সিটের বাসগুলোর যাত্রী এখন অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে।
ভিসা প্রক্রিয়ার বিলম্বের বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের চিঠি লিখেছেন মানবাধিকার কর্মী উৎপল রায়। তিনি বলেন, এখন ৯০ দিনের কমে ভারতীয় ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না। অনলাইনে আবেদনের অন্তত ৪৫ দিন পর অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে।
গত এক দশক ধরে কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকায় একটি বড় রেস্টুরেন্টে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন বিকাশ কুমার যাদব। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর কলকাতায় [বাংলাদেশি] পর্যটকের প্রবাহ বাড়বে, এমন আশা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি।
এফএসএসটিএর যুগ্ম সম্পাদক শামীম বলেন, বাংলাদেশিরা এখন কলকাতাকে পাশ কাটিয়ে থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, দুবাইয়ের মতো এশিয়ার অন্যান্য দেশে ভ্রমণ করতে যাচ্ছে।