ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতি, খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি প্রবণতা থাকায় ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট দিন দিন বেড়েই চলেছে। এর ফলে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকের ধার-দেনার হার বাড়ায় আন্তঃব্যাংক কলমানির সুদহারও সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বৃহস্পাতিবার আন্তঃব্যাংক কলমানিতে ১ থেকে ৯০ দিন মেয়াদি মোট ৫ হাজার ৯৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। যার গড় সুদহার উঠেছে ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ। যা গত ১০ বছর ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১২ সালে সর্বোচ্চ ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ গড় সুদহার উঠেছিল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, খেলাপিঋণ বৃদ্ধি, প্রত্যাশিত মাত্রায় আমানত সংগ্রহ না হওয়া, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি এবং সরকারকে ঋণ দেয়ার কারণে ব্যাংক খাতে নগদ টাকার সংকট বেড়েছে। ফলে আন্তঃব্যাংক কলমানির সুদহার বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের শেষ দিকে কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ অনিয়মের খবর জানাজানি হওয়ার পর ব্যাংক খাতের প্রতি মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হয়। এরপর সংশ্লিস্ট ব্যাংকগুলো থেকে টাকা তুলে নিতে থাকেন গ্রাহকরা। আবার সে সময় ব্যাংকগুলোতে নতুন আমানত আসাও কমে যায়। এতে ওই ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার সংকট তৈরি হয়, যা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি ব্যাংকগুলো। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। এতে জীবযাত্রার খরচ বেড়েছে। কিন্তু একই সময় মানুষের আয় খুব একটা বাড়েনি।
আবার উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে ব্যাংকে আমানতের সুদের হার যেভাবে বাড়ার কথা সেভাবে বাড়েনি। এতে ব্যাংকগুলো প্রত্যাশিত মাত্রায় আমানত পাচ্ছে না। আবার আগের বিতরণ হওয়া ঋণ সময়মতো ফেরত আসছে না। ফলে চলমান নগদ টাকার সংকট আরও বেড়েছে। আর এই সংকট সামাল দিতে আন্তঃব্যাংক কলমানির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে অনেক ব্যাংক।