বাংলাদেশের কোনও নাগরিকের প্রতি বছর জুলাই থেকে পরের বছরের জুন পর্যন্ত ১২ মাসের আয়ের ওপর দিতে হয় কর। চলতি অর্থ বছরে রিটার্ন দাখিল করতে হবে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে। আর গত ৩০ জুনের মধ্যে যারা আয়ের একটি অংশ বিনিয়োগ বা দান করেছেন তারা এবার কর রেয়াত সুবিধা পাবেন। কর রেয়াত বলতে কর কমানো বা কর কম দেয়াকে বোঝায়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড অনুমোদিত নির্ধারিত কয়েকটি খাতে বিনিয়োগ এবং দানে উৎসাহিত করার জন্য সরকার ওই সমস্ত বিনিয়োগ এবং দানের উপর এই ছাড় দিয়ে থাকে। যার মাধ্যমে করের পরিমাণ বহুলাংশে কমানো যায়। এবার দেশের ২০টি খাতে বিনিয়োগ ও দান করলে কর রেয়াত সুবিধা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
একজন করদাতা তার মোট করযোগ্য আয়ের ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবেন। ওই বিনিয়োগকৃত অর্থের ১৫% কর রেয়াত পাবেন। অর্থাৎ সেই পরিমাণ টাকা প্রদত্ত ট্যাক্স থেকে বাদ যাবে। আয়কর নির্দেশিকা অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত কর রেয়াতের সুযোগ নেয়া যাবে।
আয়কর নির্দেশিকা অনুসারে একজন করদাতা যেসব খাতে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত সুবিধা পাবেন:
- জীবন বীমার প্রিমিয়াম।
- সরকারি কর্মকর্তার প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা।
- স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা।
- কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠী বীমা তহবিলে চাঁদা।
- সুপার এনুয়েশন ফান্ডে প্রদত্ত চাঁদা।
- যেকোনো তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিপোজিট পেনশন স্কিমে বার্ষিক সর্বোচ্চ এক লাখ ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ।
- যেকোনো সিকিউরিটিজ ক্রয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা বিনিয়োগ।
- বাংলাদেশের স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার।
- স্টক, মিউচুয়াল ফান্ড বা ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ।
- বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ।
- জাতির জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে অনুদান
- যাকাত তহবিলে দান।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোনো দাতব্য হাসপাতালে দান। এরমধ্যে রয়েছে: আহসানিয়া ক্যান্সার হাসপাতাল, আইসিডিডিআরবি, সাভারে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘সিআরপি’, ঢাকা আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতাল।
এছাড়া প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের কোনো প্রতিষ্ঠান, আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কে, সরকার অনুমোদিত জনকল্যাণমূলক বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এশিয়াটিক সোসাইটি বাংলাদেশে দান কর রেয়াতের আওতায় পড়বে।
তবে এসবের মধ্যে সবচেয়ে প্রচলিত পাঁচটি বিনিয়োগ খাত হল: জীবন বীমা, ডিপিএস, সঞ্চয়পত্র, প্রভিডেন্ট ফান্ড, শেয়ার ও ট্রেজারি বন্ড।