
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ‘রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ নীতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি বাড়ানোর এবং দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত কমানোর পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ।
বশিরউদ্দীন বলেন, শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তিনি নিজেই মার্কিন প্রশাসনের কাছে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরবেন।
মার্কিন শুল্ক আরোপের বিষয়টি নিয়ে শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠকের পর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা ব্যাখ্যা করেন, সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের সাথে সামঞ্জস্য রেখে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে আমদানিতে যেসব বাধা রয়েছে, সেগুলো দূর করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, যেহেতু রপ্তানি কমানো সম্ভব নয়, তাই বাংলাদেশ মার্কিন বাজারে রপ্তানির ওপর উচ্চ শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের তাদের রপ্তানির সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির আহ্বান জানান।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ আমদানি বৃদ্ধি ও নন-ট্যারিফ সংক্রান্ত বাধা দূর করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পদক্ষেপ নেবে।
বাংলাদেশ বর্তমানে তুলা, জ্বালানি, সয়াবিন, মেটাল স্ক্র্যাপ, বিভিন্ন শিল্পের যন্ত্রপাতি আমদানি করে থাকে। এসব পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা করা হবে।
যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত সুবিধা ভোগ করছে, সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ।
ট্রাম্পের নতুন করে রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। তিনি এশিয়ার দেশগুলোর ওপর যে শুল্ক আরোপ করেছেন, সে অনুযায়ী বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা আগামী ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
বাংলাদেশের ওপর যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, তা ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ার মতো বাংলাদেশের প্রধান এশীয় প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় কম হলেও ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বেশি।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প অন্যান্য এশীয় রপ্তানিকারকদের সাথে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে এ ধরনের শুল্ক বাধা মোকাবিলার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী।
তিনি বলেন, 'এই পরিস্থিতিতে আমরা অন্যদের তুলনায় প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা অর্জন করতে পারি বলে আশা করছি।'