মাত্র ১০ কার্যদিবসেই শেয়ার দাম বেড়ে দ্বিগুণ, এ যেন ‘আলাদিনের চেরাগ’ হাতে পাওয়ার মতো। এমনটিই হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) শেয়ারে।
গত ২৩ ডিসেম্বর কোম্পানিটির শেয়ার দাম ছিল ৪৯ টাকা ৪০ পয়সা, যা টানা বেড়ে ৬ জানুয়ারি লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ১০৪ টাকা ৬০ পয়সায়। অর্থাৎ মাত্র ১০ কার্যদিবসে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫৫ টাকা ২০ পয়সা বা ১১১ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গত ২৬ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর পর থেকেই কোম্পানিটির শেয়ার দাম পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটতে থাকে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর কোম্পানিটির শেয়ার দাম কখনো এমন উচ্চতায় পৌঁছায়নি।
কোম্পানিটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৪ টাকা ৩৪ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় মাত্র ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ৬৪৮ শতাংশ। এটাকেই হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে একটি চক্র কোম্পানিটির শেয়ারে এমন অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কোম্পানিটির শেয়ার দাম এতো বেশি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দায়িত্বশীলরা। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়ার বিষয়টি তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির দায়িত্বশীলরা।
প্রতিষ্ঠানটির লভ্যাংশের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ সর্বশেষ ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। তার আগে ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ, ২০১৮ সালে ৬ শতাংশ এবং ২০১৭ সাল ও ২০১৫ সালে ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দেয়। ২০১৬ সালে ১২ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়।
রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১৫২ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার কোটি টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের সংখ্যা ১৫ কোটি ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪০টি। প্রতিটি শেয়ারের ফেস ভ্যালু ১০ টাকা।
এ শেয়ারের মধ্যে বর্তমানে ৫২ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সরকারের কাছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ২৩ দশমিক ৬০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ২৪ দশমিক ৩০ শতাংশ।