কোম্পানি আইন চূড়ান্ত সংশোধনের মাধ্যমে অবশেষে পুঁজিবাজারে আসছে বড় ধরনের সুখবর। নতুন আইনে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ গণনা ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বন্ড, ডিবেঞ্চার বা ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক নিদর্শনপত্রে বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগ কোষের (পোর্টফোলিও) বাইরে রাখা হয়েছে।
আইন সংশোধনের আগে ব্যাংক কোম্পানি আইনে পুঁজিরবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ গণনা বাজারমূল্যে ধরা ছিল। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের আগস্টে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ গণনা ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করে একটি নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন আইন দিয়েই পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ গণনা ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করে দেয়া হলো।
সম্প্রতি এসব সংশোধনী এনে ‘ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইন, ২০২৩’ এর গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। এরই মধ্যে সংশোধন করা বিষয়গুলো দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংককে পরিপালনের নির্দেশনাও দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ গণনা ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করায় এবং বন্ড, ডিবেঞ্চার বা ইসলামিক শরিয়াহভিত্তিক নিদর্শনপত্রে বিনিয়োগ ব্যাংকের বিনিয়োগ কোষের বাইরে রাখাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, আগে বাজারমূল্যে বিনিয়োগ গণনা হওয়ার কারণে শেয়ার দাম বাড়লেই ব্যাংকের বিক্রির চাপ বেড়ে যেত। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তো পুঁজিবাজারে। এখন ক্রয়মূল্যে বিনিয়োগ গণনা করায় হঠাৎ বিক্রির চাপ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা কমবে। এতে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবেন।
কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ব্যাংকের শেয়ার কেন্দ্রীভূত করা যাবে না বলে সংশোধিত আইনে একটি বিধান করা হয়েছে। এ বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা কোনো পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা অন্যের সঙ্গে যৌথভাবে বা উভয়ভাবে কোনো ব্যাংকের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেনা।
এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন ব্যতীত কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা কোনো পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা অন্যের সঙ্গে যৌথভাবে বা উভয়ভাবে কোনো ব্যাংকের উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক হতে পারবে না বলে আইনে একটি বিধান রাখা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য শেয়ারধারক বলতে কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কোম্পানি বা কোনো পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা অন্যের সঙ্গে যৌথভাবে বা উভয়ভাবে কোনো ব্যাংকের মালিকানা স্বত্বের শতকরা ৫ শতাংশের অধিক শেয়ার ধারণকে বোঝাবে।