বিশ্বব্যাপী দিন দিন বাড়ছে ফাইভজি স্মার্টফোনের চাহিদা। বিক্রির দিক থেকে প্রথমবারের মতো ফোরজিকে ছাড়িয়ে গেছে ফাইভজি স্মার্টফোন।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জানুয়ারিতে বিক্রি হওয়া মোট স্মার্টফোনের ৫১ শতাংশই ছিল ফাইভজি স্মার্টফোন। চলতি বছরের প্রথম মাসে শীর্ষ ফাইভজি স্মার্টফোন ছিল অ্যাপলের আইফোন।
গত কয়েক বছরে ফোরজি আইওএস ও অ্যান্ড্রয়েড হ্যান্ডসেটের বিক্রি বেশি ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ফাইভজি সামনের সারিতে উঠে আসছে বলে জানায় কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ।
ফাইভজি স্মার্টফোনের বাজার হিস্যা বৃদ্ধিতে আইফোন প্রধান ভূমিকা পালন করছে। ২০২০ সালে বাজারে আসা আইফোন ১২ সিরিজ ছিল অ্যাপলের প্রথম ফাইভজি ফোন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বৈশ্বিক ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রির ৩৭ শতাংশ বাজার হিস্যা ছিল অ্যাপলের। বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনে সবচেয়ে বেশি ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে। গত জানুয়ারিতে চীনে ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে ৮৪ শতাংশ।
উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ইউরোপের মতো সমৃদ্ধ অঞ্চলে ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রি বেড়েছে যথাক্রমে ৭৩ ও ৭৬ শতাংশ। উভয় অঞ্চলে যথাক্রমে ৫০ ও ৩০ শতাংশ বাজার হিস্যা নিয়ে শীর্ষ ব্র্যান্ড ছিল অ্যাপল।
অ্যালাইড মার্কেট রিসার্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালে ফাইভজি প্রযুক্তির বাজার যেখানে ছিল ৫১৩ কোটি ডলার, ২০৩০ সালে তা ৭৯ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। ২০২১ থেকে ২০৩০ সালে ফাইভজির সম্মিলিত বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হার বা সিএজিআর থাকবে ৬৫ দশমিক ৮ শতাংশ।
২০১৯ সালে প্রথম ফাইভজি ফোন গ্যালাক্সি এস১০ ফাইভজি নিয়ে এসেছিল স্যামসাং। বর্তমান বিশ্বে ফাইভজি স্মার্টফোনের বাজার তৈরিতে স্যামসাং ও অ্যাপলের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ভিভো, শাওমি ও রিয়েলমির মতো চীনা ব্র্যান্ড।
মিডিয়াটেক ও কোয়ালকমের মতো কোম্পানির সাশ্রয়ী চিপ উদ্ভাবন ফাইভজি স্মার্টফোনের দাম সাধ্যের মধ্যে রাখছে। ফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো এখন ২০০ ডলারের মধ্যে ফাইভজি ফোন আনার চেষ্টা করছে।
এশিয়ায় ফাইভজি চিপ নির্মাণে তাইওয়ান ও চীনভিত্তিক চিপ নির্মাতা কোম্পানিগুলোর প্রতিযোগিতায় বাজেট ফাইভজি ডিভাইস নির্মাণ ব্যয় কমেছে বলে মনে করেন কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের গবেষণা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট নিল শাহ। চলতি বছরের জুন নাগাদ ১৯৯ ডলার মূল্যের ফোনে ফাইভজি প্রযুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে। আর আগামী বছরের শুরুতেই ১৫০ ডলারে মিলবে ফাইভজি স্মার্টফোন।
২০২১ সালে রিটেইলারদের কাছে চালান হওয়া স্মার্টফোনের ৪২ শতাংশই ছিল ফাইভজি স্মার্টফোন। চলতি বছরে এ হার ৫৪ শতাংশে দাঁড়াবে এবং আগামী বছরে তা দাঁড়াবে ৬৬ শতাংশ। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চালান হওয়া স্মার্টফোনের ৫৮ শতাংশ ছিল ফাইভজি সক্ষমতার। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এ হার ৮৩ শতাংশে দাঁড়াবে। ২০২৩ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ফাইভজি স্মার্টফোনের হার দাঁড়াবে ৮৯ শতাংশ।