দেশীয় টেক জায়ান্ট ওয়ালটন নিয়ে এসেছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নতুন মডেলের প্রিন্টার। একই সঙ্গে মাদারবোর্ড (এসএমটি) প্রোডাকশন প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিটও চালু করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যেখানে জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড এসেম্বলি (পিসিবিএ)।
সম্প্রতি গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের হেডকোয়ার্টারে প্রিন্টার উন্মোচন এবং মাদারবোর্ড প্ল্যান্টের দ্বিতীয় ইউনিট উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুর্শেদ।
সে সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হুমায়ূন কবীর ও আলমগীর আলম সরকার, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর লিয়াকত আলী ভুঁইয়া, নির্বাহী পরিচালক আজিজুল হাকিম ও জিনাত হাকিম।
লিয়াকত আলী ভুঁইয়া জানান, ‘প্রিন্টন’ প্যাকেজিং এ প্রাথমিকভাবে দুই মডেলের লেজার প্রিন্টার বাজারে ছেড়েছেন তারা। যার মডেল প্রিন্টন পিএমএফ২২ (Printon PMF22) এবং প্রিন্টন পিএস২২ (Printon PS22)। এর মধ্যে পিএমএফ২২ (PMF22) মডেলটি মাল্টি ফাংশন সুবিধাযুক্ত। অর্থাৎ প্রিন্টের পাশাপাশি স্ক্যান এবং ফটোকপি করা যায়। এই মডেলের প্রিন্টারের মূল্য ১৬,৭৫০ টাকা। আর পিএস২২ (PS22) মডেলটি সিঙ্গেল ফাংশনের। এতে প্রিন্টিং অপশনটি রয়েছে। এর দাম ১১,৭৫০ টাকা। ওয়ালটনের এই প্রিন্টার দুটিতে থাকছে ১ বছর পর্যন্ত ওয়ারেন্টি সুবিধা।
ওয়ালটনের প্রিন্টারের প্রধান বিশেষত্ব হচ্ছে ২২ (এ ফোর) এবং ২৩ (লেটার) পিপিএম প্রিন্ট স্পিড। অর্থাৎ অত্যন্ত দ্রুত প্রয়োজনীয় সকল ডকুমেন্ট প্রিন্ট করে। এছাড়া উভয় মডেলেই ১২০০ ইনটু ১২০০ ডিপিআই (Dpi) রেজ্যুলেশন, ৬০০ মেগাহার্টজ প্রসেসর এবং ১২৮ মেগাবাইট মেমোরি রয়েছে। এই প্রিন্টার দুটিতে ইউএসবি ক্যাবল সংযোগের মাধ্যমে প্রিন্ট করা ছাড়াও ওয়ারলেস প্রিন্টিং এর সুবিধা রয়েছে। এছাড়া মাল্টি ফাংশন প্রিন্টারটিতে নেটওয়ার্ক প্রিন্টিং এর সুবিধা রয়েছে; যা কর্মক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের বিশেষ সুবিধা দেবে।
এছাড়াও প্রিন্টারগুলোয় ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট মডেলের টোনার বাজারে এনেছে ওয়ালটন। ১,৯৮৫ টাকা মূল্যের টিএনআর১৬ (TNR16) মডেলের এই টোনারটি ওয়ালটনের ২টি প্রিন্টারেই ব্যবহার উপযোগী। এছাড়াও টোনারের রিফিল ৬৫ গ্রামের কিট পাওয়া যাচ্ছে। যার মূল্য মাত্র ৬৫০ টাকা।
ওয়ালটন পিসিবিএ’র প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদুর রহমান রাদ জানান, নিজস্ব চাহিদার মেটানোর পাশাপাশি সম্প্রতি বাণিজ্যিকভাবে পিসিবি ও পিসিবিএ উৎপাদন ও বিক্রি শুরু করেছে ওয়ালটন। দেশীয় ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও প্রযুক্তিপণ্য উদ্যেক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী কাস্টোমাইজড পিসিবি ও পিসিবিএ তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই ম্যাটাডোর গ্রুপ ওয়ালটনের কাছ থেকে ফ্যান রেগুলেটর সংক্রান্ত পিসিবিএ সাপোর্ট নিচ্ছে। আরো অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের কাছ থেকে পিসিবিএ নিতে আগ্রহী। এরই প্রেক্ষিতে মাদারবোর্ডের দ্বিতীয় ইউনিট চালু করলো ওয়ালটন।
তিনি আরো জানান, নতুন এই প্ল্যান্টে ঘন্টায় ৭২ হাজার কম্পোনেন্ট বসানোর সক্ষমতা রয়েছে। ওয়ালটনের তৈরি পিসিবি ও পিসিবিএ কম্পিউটার, টেলিভিশন, রিমোট কন্ট্রোল, এলইডি লাইট, মোবাইল ফোনের চার্জার, ইউপিএস, ফ্যান, সুইচ সকেট থেকে শুরু করে সব ধরনের ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইসে ব্যবহৃত হচ্ছে।