যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকা থেকে শিগগিরই বের হতে পারছেনা চীনভিত্তিক টেক প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। জো বাইডেন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়ার পর অনেকেই ভেবেছিলেন তিনি হুয়াওয়ের ওপর আরোপিত বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা বলবৎ না-ও রাখতে পারেন। তবে এমনটা ঘটছে না। জো বাইডেন মনোনীত কমার্স সেক্রেটারি জিনা রাইমন্ডোর এক মন্তব্যে হুয়াওয়ের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
হুয়াওয়ে ইস্যুতে রিপাবলিকান সিনেটরদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই গভর্নর বলেন, জো বাইডেন প্রশাসন খুব শিগগিরই হুয়াওয়েকে কালো তালিকা থেকে সরানোর মতো কোনো কারণ দেখছে না।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে হুয়াওয়ের ব্যবসায় প্রবৃদ্ধি রুখতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। হুয়াওয়ের ওপর মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের নিষেধাজ্ঞা আরোপিত রয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটিকে যুক্তরাষ্ট্রে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। ফলে মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে হুয়াওয়ের ব্যবসা কার্যক্রম অনেকটা স্থবির হয়ে পড়ে।
শুধু হুয়াওয়ে নয়, চীনভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্টগুলোর বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে পথ অনুসরণ করেছেন, জো বাইডেন সে পথ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন না। কারণ ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান উভয় দলের আইন প্রণেতাদের মধ্যেই তীব্র চীনবিরোধী মনোভাব রয়েছে।
জো বাইডেন একটা সময় চীনের উত্থানকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে চীন ইস্যুতে নিজের বক্তব্য ক্রমে কঠোর করেছেন তিনি। এক পর্যায়ে বাইডেনের মুখেই উচ্চারিত হয়েছে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং একজন ঠগ-প্রতারক এবং জলবায়ু ও মানবাধিকার ইস্যুতে চীনের বিরুদ্ধে আরো কঠোর হওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিটিক্যাল নেটওয়ার্ক অবকাঠামো নির্মাণে চীনের ঝুঁকিপূর্ণ কোনো প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্বে না রাখার বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেছেন জো বাইডেন।
শুধু হুয়াওয়ে নয়; ক্ষমতার একেবারে শেষ পর্যায়ে শর্ট ভিডিও তৈরির সোস্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটক ও টেনসেন্ট নিয়ন্ত্রিত উইচ্যাট নিষিদ্ধে দুটি নির্বাহী আদেশে সই করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সময় ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয়া হয়। এ সময়ের মধ্যে টিকটককে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রম মার্কিন কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা মেনে মার্কিন কার্যক্রম বিক্রির জন্য ওরাকল করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে টিকটক। বিষয়টি এখন আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আটকে আছে।
বিশ্বের বৃহৎ টেলিকম নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম এবং তৃতীয় বৃহৎ স্মার্টফোন নির্মাতা হুয়াওয়ে চীনা সরকারের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র। হুয়াওয়েকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিও বলে আসছে দেশটি। যদিও হুয়াওয়ের পণ্যের নিরাপত্তা দুর্বলতা বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র।