ঢাকা     ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ ||  ৮ পৌষ ১৪৩১

Biz Tech 24 :: বিজ টেক ২৪

ই-বর্জ্যই হতে পারে বড় সম্পদ

বিজটেক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২১:৩২, ১৪ অক্টোবর ২০২৩

আপডেট: ২১:২৮, ১৫ অক্টোবর ২০২৩

ই-বর্জ্যই হতে পারে বড় সম্পদ

দেশে প্রযুক্তি পণ্য থেকে বছরে ৩০ লাখ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য তৈরি হয়। অথচ সঠিক পদ্ধতিতে ই-বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা করতে পারলে এই বর্জ্যই হতে পারে সম্পদ, যার বাজার প্রায় ২২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। কেবল সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে আমরা এই সম্পদের সুফল পাচ্ছি না।

শনিবার বিশ্ব ই-বর্জ্য দিবস উপলক্ষ্যে তথ্য-প্রযুক্তি সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ইলেকট্রনিক্স বর্জ্য পরিবেশের জন্য বড় হুমকি। বিদেশ থেকে ব্যবহৃত পুরাতন কম্পিউটার, ল্যাপটপ কিংবা মোবাইল আমদানি জাতীয় জীবনে স্বাস্থ্যের জন্য বড় ঝুঁকি। আমরা দেশকে অন্য দেশের ই-বর্জ্যের ডাম্পিং পয়েন্ট হতে দিতে পারি না। এগুলো নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কী করে দেশে ঢুকছে তা খতিয়ে দেখতে হবে ও সেগুলোর বিক্রি বন্ধ করতে হবে। ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্য সূচিতে ই-বর্জ্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি দক্ষ ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা ও ই-বর্জ্য রিসাইক্লিং করে এটিকে সম্পদে পরিণত করতে সমন্বিত উদ্যোগে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

মোস্তাফা জব্বার প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ন্যায় ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, ই-বর্জ্যের কাঁচামাল কাজে লাগানোর বিষয় সংশ্লিষ্টদের ভাবতে হবে। সিটি কর্পোরেশনগুলোকে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সম্পৃক্ত করতে হবে। ই-বর্জ্য পুনরায় কী কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে গবেষণা হওয়া দরকার। ই-বর্জ্য নিয়ে সেই ভিত্তিতে শিল্প কারখানা গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরকেও ভূমিকা গ্রহণে এগিয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, ব্যবহৃত ব্যাটারি কীভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে সেই বিষয়টিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইল কারখানা, মোবাইল অপারেটর এবং আইএসপিসহ বিটিআরসির লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ বর্জ্য ফেরত নেওয়ার বিধিবিধান যাতে যথাযথভাবে পালন করে এ বিষয়েও উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা একটি কঠিন কাজ। সফলভাবে ই-বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা করতে পারলে সমস্ত জনগোষ্ঠীর জন্য তা হবে অত্যন্ত কল্যাণকর।

ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ায় ৩৭ বছরের দীর্ঘ পথপরিক্রমায় তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে বাংলাদেশ পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বে যোগ্যতা অর্জন করেছে। মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশে বিআইজেএফ’র ভূমিকার প্রশংসা করেন।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যশনাল ইউনিভার্সিটি, জেআর রিসাইকেলিং সল্যুশন লি. এবং এনএইচ এন্টারপ্রাইজের সহযোগিতায় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশনের হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) এবং এফবিসিসিআইয়ের ইনোভেশন ও রিসার্চ সেন্টারের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ, ভূমি রেকর্ড ও  জরিপ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল ডিজিটাল কমার্স সেলের উপ পরিচালক, মোহাম্মদ সাইদ আলী, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি সভাপতি সুব্রত সরকার, আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগের ডিন এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আখতার হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইটি), বিভাগের অধ্যাপক ড. বি এম মইনুল হোসেন।

সভাপতিত্ব করেন বিআইজেএফ এর সভাপতি নাজনীন নাহার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সার্ক সিসআই-এর নির্বাহী সদস্য শাফকাত হায়দার।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাহফুজা পারভীন, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের সহ-প্রধান অধ্যাপক শেখ রাশেদ হায়দার নূরি, মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ ও জেআর রিসাইকেলিং সল্যুশনের জেনারেল ম্যানেজার মঞ্জুর আলম।

সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিআইজেএফ’র সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান।

এর আগে সকালে বিশ্ব ই-বর্জ্য দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু করে এক র‌্যালি দোয়েল চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।