সেমিকন্ডাক্টর স্বল্পতায় সাপ্লাই চেইনে বিঘ্ন ঘটায় চিপ সংকটের শঙ্কায় পড়েছে বিশ্বের বৃহত্তম চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্যামসাং। এ সংকটের ফলে আগামীতে প্রতিষ্ঠানটির গ্যালাক্সি নোট স্মার্টফোন আনা কঠিন হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার টেক জায়ান্ট।
চিপ নির্মাণ চাঙ্গায় এরই মধ্যে বিকল্প পথ খুঁজতে শুরু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। সম্প্রতি শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে এক বৈঠকে স্যামসাংয়ের সহপ্রধান নির্বাহী এবং মোবাইল প্রধান কোহ ডং-জিন বলেন, বৈশ্বিক আইটি খাতে চিপের চাহিদা ও সরবরাহে গুরুতর ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছে। চিপ স্বল্পতা যে শতভাগ সমাধান হয়েছে তা বলা যাচ্ছে না। চাহিদা পূরণে স্যামসাং অন্যান্য দেশের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মহামারী আঘাত হানার পর গত বছর থেকে সেমিকন্ডাক্টর ঘাটতি শুরু হয়। বিক্রি কম হওয়ায় গাড়ি নির্মাতারা চীনা কম্পিউটার চিপ কারখানায় নিজেদের অর্ডার কমিয়ে দেয়। ফলে চিপ সরবরাহকারী কারখানাগুলো অন্যান্য উচ্চ চাহিদার খাতের দিকে চলে যায়। এর প্রভাব ফেলে গাড়ি নির্মাণ শিল্পেই। চাহিদা বাড়ার পরও বাতিল করা অর্ডার আর ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় উৎপাদন কমিয়ে দেয় ফক্সওয়াগন, হোন্ডা, টয়োটা ও জেনারেল মোটরসের (জিএম) মতো প্রতিষ্ঠান। করোনার প্রভাবে মানুষের ঘর বন্দি থাকায় এরই মধ্যে প্রযুক্তি খাতের বিক্রি বেড়েছে বহু গুণে।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের অংশীদার পিটার রিচার্ডসন বলেন, সেমিকন্ডাক্টর নির্মাতারা সরবরাহের ঘাটতি সামাল দিতে কঠোর পরিশ্রম করছেন। কিন্তু বিনিয়োগের সরবরাহে পরিণত হতে আরো সময় লাগবে। এর মানে দাঁড়াচ্ছে কিছু পণ্যের ঘাটতি হয়তো আগামী কয়েক মাস থাকবে এবং খুব সম্ভব ২০২২ সালেও তা বহাল থাকবে।
চিপ সংকটের প্রভাবে স্যামসাংয়ের নতুন ‘গ্যালাক্সি নোট’ স্মার্টফোন আসতে যে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে এ ইঙ্গিত দিয়েছেন কোহ ডং-জিন। জানুয়ারিতে বাজারে এসেছে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২১। বেন ব্যারিঙ্গারের রিসার্চ অ্যানালিস্ট কুইল্টার শেভিওত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনার কারণে মহামারীর আগেও সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে অনিশ্চয়তা ছিল।
চিপ সংকটের কারণে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে স্মার্টফোন উৎপাদন ৫ শতাংশ কমতে পারে বলে পূর্বাভাস তাইওয়ানিজ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রেন্ডফোর্সের।