
চলতি বছর হজযাত্রীদের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর ‘লাব্বাইক’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করতে যাচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে হজযাত্রীদের জন্য হজ প্রি-পেইড কার্ড চালু ও মোবাইল ফোনে রোমিং সুবিধাও দেয়া হবে।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সরকারি বাসভবন যমুনায় হজযাত্রীদের জন্য এসব সেবা উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এবার হজে বাংলাদেশ থেকে ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী হজ পালন করবেন। আগামী ২৯ এপ্রিল থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হবে।
'লাব্বাইক' অ্যাপ চালুর পদ্ধতি
গুগল প্লে স্টোর থেকে এই লিংক: https://play.google.com/store/apps/details?id=com.ooroh.labbayk থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করে ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) যাচাইয়ের পর ৪ ডিজিটের পিন সেট করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের সময় হজযাত্রীর মোবাইল নম্বর, পিআইডি (পিলগ্রিম আইডি) ও জন্ম তারিখ প্রয়োজন হবে। একজন হজযাত্রী তার পরিবারের সর্বোচ্চ ৩ জন সদস্যকে ইনভাইটেশন পাঠিয়ে অ্যাপে যুক্ত করতে পারবেন।
পরিবারের সদস্যের নাম ও মোবাইল নম্বর দিয়ে ইনভাইটেশন পাঠালে ওই সদস্য তার মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার পর তারা হজযাত্রীর তথ্য জানতে পারবেন। এছাড়াও গেস্ট ইউজার হিসেবেও রেজিস্ট্রেশন করা যাবে—যা সবার জন্য উন্মুক্ত।
হজযাত্রী হারিয়ে গেলে বা গুরুতর অসুস্থ বা বিপদে পড়লে জরুরি মুহূর্তে অ্যাপ থেকে এসওএস (সেভ আওয়ার সোলস) বাটনে ক্লিক করলে সাপোর্ট টিম তাকে উদ্ধার বা সহায়তা করবেন।
অ্যাপের মাধ্যমে নামাজের সময়সূচি, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা যাবে। হজযাত্রী ফ্লাইটের বিস্তারিত তথ্য যেমন ফ্লাইট কোড, বোর্ডিং টাইম, ডিপারচার ও অ্যারাইভাল টাইম, লাগেজের ওজনসীমা ইত্যাদিও জানতে পারবেন। লোকেশন ট্র্যাকিং যেমন হজযাত্রী গুগল ম্যাপে নিজেদের বা দলের অন্যান্য সদস্যদের অবস্থানও নির্ণয় করতে পারবেন।
দৈনিক হজ সিডিউল, আবাসন তথ্য— যেমন হোটেলের নাম, ঠিকানা, দূরত্ব, ছবি, ভিডিও, চেক-ইন/চেক-আউট তারিখ ইত্যাদি অ্যাপ থেকে জানা যাবে। এছোড়াও হজ এজেন্সির তথ্য— যেমন এজেন্সি নাম, লাইসেন্স নম্বর, প্যাকেজ, রেটিং, রিভিউ প্রদান ইত্যাদি সেবা অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
হজ প্রি-পেইড কার্ড
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, এখন প্রি-পেইড কার্ড ইস্যুতে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজন নেই। কার্ডের মেয়াদ ৫ বছর। এটি ক্যাশের পরিপূরক। এই কার্ড ইস্যুতে কোনো মাশুল বা ফি নেই। লেনদেন প্রসেস ফি ৩ শতাংশের স্থলে ১ শতাংশ।
ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, হজ পরবর্তী সময়েও এ কার্ড ব্যবহার করা যাবে। বাংলাদেশি টাকা লোড করে ডলার/সৌদি রিয়াল পাওয়া যাবে। প্রত্যেক হজযাত্রী ১ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার টাকা কার্ডে লোড করে নিতে পারবেন।
সৌদি আরবে মাস্টার কার্ড লোগোযুক্ত এটিএম বুথ থেকে নগদ সৌদি রিয়াল উত্তোলন এবং পিওএস (পয়েন্ট অব সেল) মেশিনে পেমেন্ট সুবিধা, কার্ডে ব্যালেন্স রিলোড এবং অব্যবহৃত ব্যালেন্স রিফান্ড সুবিধা পাওয়া যাবে এ কার্ডের মাধ্যমে।
ইসলামী ব্যাংকের সকল শাখা থেকে এ কার্ড পাওয়া যাবে। এজন্য মূল পাসপোর্ট বা পাসপোর্টের ফটোকপি, জাতীয় পরিচয়পত্র, ২ কপি ছবি, হজ ভিসার কপি, সচল মোবাইল নম্বর প্রয়োজন হবে।
রোমিং সুবিধা
২০২৫ সালের হজে হজযাত্রীদের জন্য 'গ্রামীণফোন', 'বাংলালিংক' ও 'রবি' বিশেষ ফোন রোমিং প্যাকেজ চালু করেছে। রোমিং প্যাকেজের হজযাত্রীরা সৌদি আরবে মোবাইল সিম কেনা ছাড়াই বাংলাদেশে ব্যবহৃত নিজস্ব মোবাইল সিমের মাধ্যমে প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলতে ও বার্তা পাঠাতে পারবেন। এক্ষেত্রে হজযাত্রীদের জন্য গ্রামীণফোন ছয়টি, রবির তিনটি, বাংলালিংক পাঁচটি স্পেশাল রোমিং প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।